Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

Title
ঘরে ঘরে আলো জ্বালানোই আমাদের লক্ষ্য : প্রধানমন্ত্রী
Details

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘ঘরে ঘরে আলো জ্বালাব, সেটাই আমাদের লক্ষ্য। একটি ঘরও আর অন্ধকারে থাকবে না। দেশকে উন্নতসমৃদ্ধ করে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা হিসেবে আমরা গড়ে তুলব।’ গতকাল বুধবার দুপুরে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে নতুন ট্রান্সমিশন ও বিতরণ লাইনের পাশাপাশি আটটি বিদ্যুৎকেন্দ্র উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

উদ্বোধন করা বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোয় এক হাজার ৩৭৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হবে। প্রকল্পগুলোর মধ্যে সদ্য নির্মিত আটটি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, একটি সাবস্টেশন ও একটি সঞ্চালন লাইনও রয়েছে। প্রকল্পগুলো চালু হলে পার্বত্য জেলা বান্দরবানের থানচিসহ ১১ উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ শতভাগ নিশ্চিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ১০টি উপজেলা হচ্ছে ঢাকার কেরানীগঞ্জ ও সাভার, মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ী, গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া, টাঙ্গাইলের ভুয়াপুর, চট্টগ্রামের কর্ণফুলী, ফেনীর দাগনভূঞা, কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর, মেহেরপুরের মুজিবনগর, নীলফামারীর সৈয়দপুর এবং পার্বত্য জেলা বান্দরবনের থানচি। সদ্য নির্মিত আটটি বিদ্যুৎকেন্দ্র হলো শাহজীবাজার ৩৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র, খুলনার ২২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র, আশুগঞ্জের ৪৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র, মানিকগঞ্জের ৫৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র, নবাবগঞ্জের ৫৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র, জামালপুরের ৯৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র, বরিশালের ১১০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং মদনগঞ্জের ৫৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়া, মেহেরপুরের মুজিবনগর, টাঙ্গাইলের ভুয়াপুর, নীলফামারীর সৈয়দপুর, জামালপুরের সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজ প্রান্ত, বান্দরবনের থানচি উপজেলাবাসী, গাজীপুরের কালিয়াকৈরবাসীর সঙ্গে সরাসরি মতবিনিময় করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ উপদেষ্টা তৌফিক-ই ইলাহী চৌধুরী, রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচটি ইমাম, প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু, কর্নেল (অব.) ফারুক খান প্রমুখ।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় আসে তখন দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করা দায়িত্ব মনে করে। আর যারা অবৈধভাবে হত্যা, ক্যু, ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেছিল এবং ২১ বছর এ দেশের মানুষের ওপর জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসেছিল, তাদের কোনো দায়-দায়িত্ববোধ ছিল না। তারা শুধু লুটপাট, দুর্নীতি, অর্থপাচার, খুনখারাবি, হত্যা, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস সৃষ্টি, আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মানুষ হত্যা করা, জাতীয় সম্পদ পুড়িয়ে ধ্বংস করা, এমনকি বিদ্যুৎকেন্দ্র পুড়িয়ে দেওয়া এবং সেখানে কর্মরত প্রকৌশলীকে পর্যন্ত হত্যা করেছে এই বিএনপি-জামায়াত জোট। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় ও ৫ জানুয়ারির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপি-জামায়াত জোটের সহিংস হরতাল-অবরোধের সময়ের কথাও তুলে ধরেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘নিশ্চয়ই দেশবাসী ভুলে যায়নি ২০১৩, ২০১৪, ২০১৫ সালে কি তা-ব তারা এ দেশে করেছে। দেশের প্রতি তাদের কোনো দায়িত্ববোধ নেই। অর্থসম্পদ বানানো এটাই তাদের ক্ষমতায় থাকার লাভ। তিনি বলেন, ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরই সাধারণ মানুষের জীবনমান উন্নয়নের জন্য আমরা চেষ্টা করেছি, যার সুফলটা এখন দেশের মানুষ পাচ্ছেন। অতীতে বিদ্যুৎ নিয়ে হাহাকার অবস্থা ছিল। আমরা বিদ্যুৎ প্রকল্পের বহুমুখীকরণ এবং বেসরকারি খাতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্যোগ নেই। বিএনপি নেত্রী বিদ্যুৎ দিতে না পারলেও দিয়েছিল খাম্বা। কারণ তার ছেলে খাম্বা ইন্ডাস্ট্রি করেছিল। তারা বিদ্যুৎ উৎপাদন তো বাড়ায়নি বরং কমিয়ে দিয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সততা ও দক্ষতার সাহায্যে উৎপাদন বৃদ্ধি করে বর্তমানে আমরা ১৫ হাজার ৩৫১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব করেছি। শতকরা ৮০ ভাগ মানুষের ঘরে আমরা বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছি। আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করলে দেশের মান যে উন্নত করা যায় তা আমরা প্রমাণ করেছি।’

পার্বত্য চট্টগ্রামের অধিবাসীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দীর্ঘদিন এখানে একটি অশান্ত পরিবেশ ছিল। আমি প্রথমবার সরকারে আসার পর পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি করি এবং এরপর সেখানে সত্যিই শান্তি ফিরে আসে এবং সার্বিক উন্নয়নের ব্যাপক কর্মসূচি আমরা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। যেটা সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ ছিল সেই রাস্তাঘাট, পুল ব্রিজÑআমরা করে দিচ্ছি। পাশাপাশি এখানে কোনো মোবাইল নেটওয়ার্ক ছিল না, আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর সেখানে যেন মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারে সেই নেটওয়ার্ক আমরা করে দিয়েছি। আজ বিদ্যুতের ব্যবস্থা করে দিলাম। পাশাপাশি গোটা পার্বত্য চট্টগ্রামের উন্নয়নের জন্য ইতোমধ্যে ৬০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সমগ্র এলাকায় বিদ্যুতায়নের ব্যবস্থা করা হবে। যেসব জায়গায় গ্রিডলাইন যাওয়া কষ্টকর সেখানে সোলার প্যানেল দিচ্ছি। এখানে ৪৬ হাজার সোলার হোম করা হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ওই এলাকার মানুষ যেন আর দরিদ্র না থাকে, সেজন্য সব ধরনের উদ্যোগ আমাদের সরকার বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। থানচিসহ বিভিন্ন এলাকার স্কুলগুলোকে আবাসিক স্কুল করে দেওয়ারও আমরা উদ্যোগ নিয়েছি। এর আগে প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে রূপালি ব্যাংকের ‘শিওর ক্যাশের’ মাধ্যমে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষা উপবৃত্তির টাকা বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব আহমেদ কায় কাউস পাওয়ার পয়েন্ট পেজেন্টেশনের মাধ্যমে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর বৃত্তান্ত তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে একটি ভিডিও ক্লিপিংসও প্রদর্শন করা হয়।

"

Images
Attachments